মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

সরকারের সামাজিক ভাতার অর্থ আদৌ কাজে লাগছে?


সরকারের সামাজিক ভাতার অর্থ আদৌ কাজে লাগছে?
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

মাসে ৮৫০ টাকার প্রতিবন্ধী ভাতা কিংবা ৫৫০ টাকার বিধবা ভাতা ফুরিয়ে যায় একদিন বাজারে গেলেই। আবার ভাতাভোগীদের তালিকায় নাম লেখাতে গিয়ে নানা ভোগান্তিতে পড়েন সত্যিকারের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলো। গত কয়েক বছর ধরে ক্রমান্বয়ে বেড়েছে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ। কিন্তু দরিদ্রতা কি কমেছে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ খাতে কাঙ্ক্ষিত সুফল ভোগ করতে হলে প্রয়োজন বরাদ্দ করা বাজেটের সুষম বণ্টন।

রিকশাচালক মোস্তফা আলী, বয়স ৭০ ছুঁইছুঁই। এখনও রিকশার প্যাডেল ঘুরলে ঘোরে সংসারের চাকা। বয়স্ক ভাতার কার্ড তৈরির চেয়ে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে উপার্জন করা তার কাছে ঢের সহজ।

তিনি জানান, ‘বয়স্ক ভাতার কার্ড করতে গেলে মেম্বার-চেয়ারম্যানকে ৫-৬ হাজার টাকা দিতে হয়। টাকার অভাবে কার্ড করতে পারছি না।’

বাজেট সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের

আবার ঝোলা কাঁধে দিনভর অলিগলি ঘুরে বেড়ানো বেদে সম্প্রদায়ের নারীরা জানেনই না সামাজিক নিরাপত্তা খাতের নামে প্রতিবছর তাদের জন্য বরাদ্দ থাকে হাজার হাজার কোটি টাকা। বাজেট সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণাই নেই; শুধু জানেন ভাতা পাচ্ছেন না।

তবে যারা পাচ্ছেন, তাদের বরাদ্দের বহর ৫৫০ থেকে বড়জোর ৮৫০ পর্যন্ত। সংসারের উনুনের আগুনটা ঠিকঠাক জ্বলে তো তাদের? তারা জানান, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ৮৫০ টাকায় কিছুই হয় না। ভাতা আরও বাড়ানো দরকার।

প্রতি অর্থবছরেই বাড়ছে এ খাতের বরাদ্দ ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা। ২০২০-২১ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে সেটি বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে এখাতে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা।

অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দের পরিমাণ

আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ রয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা; যা মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫২ শতাংশ।

বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিবিধি, মূল্যস্ফীতি আর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, সবকিছু মাথায় রেখে আসন্ন বাজেটেও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দে অগ্রাধিকার ও ব্যয়ে স্বচ্ছতার নিশ্চয়তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা দরকার বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ ড. এম আবু ইউসুফ বলেন, আসছে বাজেটে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ও খোলাবাজারে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।