ওসমান হাদীকে গুলি করে হত্যা চেষ্টায় "ইলেকশন অবজার্ভার সোসাইটি"এর তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ
১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৫:৩৯ অপরাহ্ণ
প্রতি বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজার দশমীর তিন দিন পর জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে অনুষ্ঠিত হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী 'লাঠি খেলা'। হারানো ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন উপজেলার দেওগ্রামের বাসিন্দারা।
প্রতিবছরের ন্যায় শনিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল শুরু হয়েছে এই লাঠি খেলার মেলা। ঢোলের বাজনা, আর কাঁসার ঘণ্টার তালে তালে লাঠির কসরত। এদিকে প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত, আবারও পাল্টা আঘাত। এ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন লাঠিয়ালরা। আর সেখানে উপস্থিত শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ সব বয়সী মানুষরা তাতে উৎসাহ দিচ্ছেন। এ উপলক্ষে এখানে মেলা বসে। লাঠি খেলা আর মেলাকে কেন্দ্র করে উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীরা জানান, শতাধিক বছর আগে থেকে এই লাঠি খেলার মেলা চলছে। প্রতি বছর দুর্গাপূজার দশমীর তিনদিন পর এই মেলা বসে। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের দাওয়াত করা হয়। মেলার জন্য বিশেষভাবে দাওয়াত পান এ গ্রামের মেয়ে জামাইরা। মেলার দুদিন আগে থেকে আত্মীয়-স্বজনরা গ্রামে আসতে শুরু করে। মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৩০- ৪০ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে এ মেলায়।
মেলার দিন দুপুরে প্রতিটি বাড়িতে ধুমধামে খাওয়া দাওয়া হয়। মেলার দিন লাঠিয়ালেরা পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরে লাঠি খেলা দেখান। বিকেল লোকজন মেলায় পুরোদমে কেনা-কাটা করেন। গভীর রাত পর্যন্ত মেলা চলে। তাছাড়া পরদিন দুপুর পর্যন্তও চলবে এই মেলা।
লাঠি খেলা দেখতে আসা পাশের গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, আমার বাড়ি পার্শ্ববর্তী মাহমুদপুর গ্রামে। বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। এ মেলার বিশেষ আকর্ষণ লাঠি খেলার মেলা আমাকে কিছুক্ষণের জন্য শৈশবে কথা মনে করিয়ে দেয়।
ঐ গ্রামের ইব্রাহিম হোসেন বলেন, অন্য কোনো উৎসবে জামাই-মেয়ে বা আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত না করলেও সমস্যা থাকে না। কিন্তু পূর্ব পুরুষদের রীতিনীতি অনুযায়ী লাঠি খেলার মেলায় তাদের দাওয়াত দিতেই হবে।
মেলার আয়োজকরা জানান, এ মেলার বয়স দেড়শ বছরের চেয়েও বেশি। এবার অন্যবছরের চেয়েও মেলায় বেশি জনসমাগম হয়েছে। আমরা বংশপরম্পরায় এ মেলাকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি।